বৈষব পদাবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর । বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
বৈষব পদাবলী : বৈষ্ণব পদাবলি বা বৈষ্ণব পদাবলী বৈষ্ণব ধর্মতত্ত্বের রসভাষ্য নামে খ্যাত এক শ্রেণীর ধর্মসঙ্গীত সংগ্রহ। বৈষ্ণব পদাবলী সাহিত্যর সূচনা ঘটে চর্তুদশ শতকে বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাস-এর সময়ে, তবে ষোড়শ শতকে এই সাহিত্যের বিকাশ হয়। বৈষ্ণব পদাবলীর প্রধান অবলম্বন রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা।
1.” গৌরচন্দ্রিকা ” শব্দের আভিধানিক অর্থ কি ?
উত্তর:- ভূমিকা ।
2. ” বৈষ্ণব পদাবলীর ” পদ ” শব্দটির অর্থ কি ?
উত্তর:- ” বৈষ্ণব ” পদাবলীর ” পদ ” শব্দটির অর্থ হল কবিতা বা সঙ্গীত ।
3.” বৈষ্ণব পদাবলীর ” প্রথম পদকর্তা কে ?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদাবলীর প্রথম পদকর্তা হলেন জয়দেব । তাঁর ” গীতগোবিন্দম্ ” কাব্য টি আদি বৈষ্ণব পদাবলীর নিদর্শন ।
4.” বৈষ্ণব পদাবলী” প্রধানত কয়টি ভাষায় লেখা ?
উত্তর:- বাংলা ও বজ্রবুলি ।
5. দুজন মুসলমান বৈষ্ণব কবির নাম ?
উত্তর:- সৈয়দ মর্তুজা, নাসির মামুদ।
6. বৈষ্ণব পদাবলী কোন শ্রেণীর কাব্য ?
উত্তর:- গীতিকাব্য ।
7. বৈষ্ণব পদাবলী কী ?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদাবলী হল বৈষ্ণব ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক গীতিকাব্য। মধ্যযুগে বৈষ্ণব সাধকগন রাধাকৃষ্মের ও চৈতন্যদেবের লীলাবৈচিত্র্য অবলম্বন করে বৈষ্ণবধর্মভিত্তিক যে বিশেষ একধরনের গীতিকাব্য রচনা করেছিলেন, তাকেই সাধারণভাবে বৈষ্ণব পদাবলী বলা হয়।
8. বৈষ্ণব পদাবলী রচনার সময় কাল নির্দেশ কর।
উত্তর:- বৈষ্ণব পদাবলী রচনার সময়কাল হ’ল পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত।
9. কে ‘পদাবলী’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন ?
উত্তর:- পদ বা গানের সংকলন অর্থে পদাবলী শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন কবি জয়দেব, তাঁর ‘গীতগোবিন্দ’ কাব্যে ‘মধুরকোমলকান্ত পদাবলী’ শ্লোকে।
10. বৈষ্ণব পদাবলী সাহিত্যের ধারাকে কয়টি যুগে ভাগ করা হয়? কী কী?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদাবলী সাহিত্যের ধারাকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়। যথা প্রাক্-চৈতন্য যুগ, চৈতন্য যুগ এবং চৈতন্যোত্তর যুগ।
11. প্ৰাক্ চৈতন্য যুগের দু’জন পদকর্তার নাম লেখ।
উত্তর:- প্রাক্ চৈতন্য যুগের দু’জন পদকর্তা হ’লেন ‘বিদ্যাপতি’ এবং ‘চণ্ডীদাস’।
12. চৈতন্যযুগের দু’জন পদকর্তা নাম লেখ।
উত্তর:- চৈতন্যযুগের দু’জন পদকর্তার হলেন বাসু ঘোষ এবং গোবিন্দ ঘোষ।
13. চৈতন্যোত্তরযুগের দু’জন পদকর্তার নাম লেখ।
উত্তর:- চৈতন্যোত্তর যুগের দু’জন পদকর্তা হলেন গোবিন্দ দাস ও জ্ঞানদাস।
14. ব্রজবুলি কী?
উত্তর:- ব্রজবুলি হ’ল বৈষ্ণব পদাবলী রচনার উদ্দেশ্যে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম ভাষা। অবহট্ঠ ও মৈথিলী ভাষার সংমিশ্রণে গঠিত এক কৃত্রিম অথচ মধুর সাহিত্যিক ভাষার নাম ব্রজবুলি। কবি ঈশ্বরগুপ্ত প্রথম ব্রজবুলি শব্দটি ব্যবহার করেন।
15.” অভিনব জয়দেব ” কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- কবি বিদ্যাপতি কে ।
16. ” রসমঞ্জরী ” গ্রন্থের সংকলক কে ?
উত্তর:- পীতাম্বর দাস ।
17. প্রথম চৈতন্যে বিষয়ক বাংলা পদ কে লেখেন ?
উত্তর:- মুরারী গুপ্ত ।
18. সনাতন গোস্বামীর কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো ?
উত্তর:- হরিভক্তিবিলাস , বৈষ্ণবতোষণী , প্রভৃতি ।
19.” গীত চন্দ্রোদয়’’ পদ সংকলন টি কে প্রকাশ করে ?
উত্তর:- বিশিষ্ট পদকর্তা ও গ্রন্থকার নরহরি চক্রবর্তী ।
20.” পদকল্পতরু ” বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থটির প্রকৃত নাম কি ? গ্রন্থ টির সংকলক কে ?
উত্তর:- ” গীতকল্পতরু ” গ্রন্থটির সংকলক হলেন গোকুলানন্দ সেন ।
21.” পদকল্পতরু ” গ্রন্থে কতজন পদকর্তার কত গুলি পদ স্থান পেয়েছে ?
উত্তর:- ১৩০ জন পদকর্তার চার হাজারেরও বেশি পদ স্থান পেয়েছে ।
22.” রসকলিকা ” গ্রন্থের সংকলক কে ?
উত্তর:- নটবর দাস ।
23. ” পদরত্নাকর ” গ্রন্থের সংকলক কে ?
উত্তর:- কমলাকান্ত দাস ।
Read More : বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস। মঙ্গল কাব্য। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
24. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পাদিত বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থটির নাম কি ? কবির সহযোগী সম্পাদক কে ছিলেন ?
উত্তর:- ” পদরত্নাবলী ” ১২৯২ বঙ্গাব্দে । কবির সহযোগী সম্পাদক ছিলেন শ্রীশচন্দ্র মজুমদার ।
25.আদি বৈষ্ণব কবি কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- ” গীতগোবিন্দম্ ” এর কবি জয়দেব কে ।
26. ” মৈথলীর কোকিল ” কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- মিথিলার বিশিষ্ট কবি বিদ্যাপতি কে ।
27. বৈষ্ণব পদাবলী ছাড়া বিদ্যাপতি কি কি গ্রন্থ লিখেছিলেন ?
উত্তর:- কীর্তিলতা , কীর্তিপতাকা , ভু – পরিক্রমা , দুর্গাভক্তিতরঙ্গীনি , হরগৌরী বিষয়ক পদাবলী ইত্যাদি।
28. বিদ্যাপতির আদি নিবাস কোথায় ?
উত্তর:- বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলার মধুবনী পরগনার বিসফিগ্রামে ।
29. বিদ্যাপতি কোন রানীর গুনমুগ্ধ ছিলেন ?
উত্তর:- রানী লোছমী দেবীর ।
30.” দ্বিতীয় বিদ্যাপতি ” কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- গোবিন্দ দাস কে ।
31.ছোট বিদ্যাপতি কে ?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদকর্তা কবিরঞ্জন ।
32. বড়ু চণ্ডীদাসের নিবাস কোথায় ? ইনি কোন দেবীর উপাসক ছিলেন ?
উত্তর:- বাঁকুড়া জেলার ছাতনা গ্রামে । বাশুলী দেবীর উপাসক ছিলেন ।
33.পদাবলীর চণ্ডীদাসের নিবাস কোথায় ? এর সাধন সঙ্গিনীর নাম কি ?
উত্তর:- বীরভূম জেলার নান্নুর গ্রামে । রামি ।
34.কোন কোন পর্যায়ের পদ রচনায় চন্ডীদাস শ্রেষ্ট ?
উত্তর:- পূর্বরাগ ও নিবেদন পর্যায়ের ।
35. ‘’রাধা ” নামের প্রথম উল্লেখ কোথায় আছে ?
উত্তর:- হাল – এর ” গাথাসপ্তশতি ” গ্রন্থে ।
36. গৌরাঙ্গ কে নিয়ে প্রথম বাৎসল্য রসের পদ কে লেখেন ?
উত্তর:- বাসুদেব ঘোষ ।
37. বিদ্যাপতিকে ” কবি সার্বভৌম ” উপাধি কে দেন ?
উত্তর:- শঙ্করীপ্রসাদ বসু।
38. গৌরচন্দ্রিকা প্রথম কোথায় গাওয়া হয়েছিল ?
উত্তর:- খেতুরির মহোৎসবে ।
39. শ্রী গৌরাঙ্গ কার কাছে কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষা নেন ?
উত্তর:- ইশ্বরপুরীর কাছে ।
40. বিদ্যাপতি কার সভাকবি ছিলেন ?
উত্তর:- রাজা শিব সিংহের ।
41. ” গৌরাঙ্গ বিজয় ” কার লেখা ?
উত্তর:- চূড়ামনি দাসের ।
42.গোবিন্দ দাস কে ” কবিরাজ ” উপাধি কে দিয়েছিলেন ?
উত্তর:- শ্রীজীব গোস্বামী ।
43. বিদ্যাপতি কোন গ্রন্থে রাজা কীর্তি সিংহের প্রশস্তি রচনা করেছেন ?
Read More : বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – “মধ্যযুগ” থেকে গুরুত্বপূর্ণ MCQ
উত্তর:- ” কীর্তিলতা ” গ্রন্থে ।
44. বিদ্যাপতি কোন রাজ বংশের পৃষ্টপোষক ছিলেন ?
উত্তর:- মিথিলার কামেশ্বের বংশের ।
45. গোবিন্দ দাস কার কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন ?
উত্তর:- শ্রীনিবাস আচার্যের কাছ ।
46. কোন কোন পর্যায়ের পদ রচনায় গোবিন্দ দাস শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছেন ?
উত্তর:- গৌরচন্দ্রিকা , অভিসার , মান ইত্যাদি ।
47. জ্ঞান দাসের জন্ম স্থান কোথায় ?
উত্তর:- বর্ধমান জেলার কাদঁড়া গ্রামে।
48 .জ্ঞানদাস কার কাছে মন্ত্রশিষ্য ছিলেন ?
উত্তর:- জাহ্নবী দেবীর।
49. বলরাম দাস কত খ্রি: জন্ম গ্রহণ করেন ?
উত্তর:- ষোড়শ শতকের প্রথার্ধে।
50. বলরাম দাস কার শিষ্য ছিলেন ?
উত্তর:- নিত্যানন্দের ।
51.কোন পর্যায়ের পদ রচনায় বলরাম দাস অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন ?
উত্তর:- বাৎসল্য রসের পদ রচনায় ।
52. বিদ্যাপতি কোন কোন পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন ?
উত্তর:- মিলন , মাথুর , ভাবসম্মিলন , প্রার্থনা ইত্যাদি পর্যায়ের পদ রচনায় ।
53. ” ব্রজবুলি ” শব্দটি কে প্রথম ব্যবহার করেন ?
উত্তর:- ঈশ্বর গুপ্ত ।
54. কোন ধরনের পদে বিদ্যাপতি আত্মবিশ্লেষণ করেছেন ?
উত্তর:- প্রার্থনা বিষয়ক পদে ।
55.বৈষ্ণব মতে রস কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তর:- পাঁচ প্রকার – শান্ত , দাস্য , সখ্য , বাৎসল্য , মধুর ।
56.শৃঙ্গার রস কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তর:- দুই প্রকার – ১) বিপ্রলম্ভ শৃঙ্গার ২) সম্ভোগ শৃঙ্গার ।
57.কোন বৈষ্ণব কবিকে ” পঞ্চোপাশক ” বলা হয় ?
উত্তর:- কবি সার্বভৌম বিদ্যাপতি কে ।
58. জ্ঞান দাস কোন বংশের সন্তান ?
উত্তর:- ব্রাহ্মণ বংশের সন্তান ।
59.বৈষ্ণবদের প্রধান দুটি ধর্ম গ্রন্থের নাম লেখো ?
উত্তর:- বিষ্ণুপুরান ও ভাগবত পুরান ।
60. বজ্রবুলি ভাষায় কে প্রথম পদ রচনা করেন ?
উত্তর:- যশরাজ খান ।
61. বৈষ্ণব পদাবলীতে শ্রেষ্ঠ রস কোনটি ?
উত্তর:- মধুর রস ।
62.পূর্বরাগ কীভাবে উৎপন্ন হয় ?
উত্তর:- দর্শন ও শ্রবণের মাধ্যমে।
63. An introduction to the Maithili Language of North bihar নামক গ্রন্থটি কার লেখা ?
উঃ গ্ৰীয়ার্সন সাহেব (১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে)
64. বিদ্যাপতির পিতার নাম কি ?
উত্তরঃ- গণপতি ঠাকুর।
65. বিদ্যাপতি কয়জন রাজা ও কয়জন রাণীর পৃষ্টপোষকতা লাভ করেছিলেন ? তাঁদের নাম কী ?
উত্তরঃ- ছয়জন রাজা এবং একজন রাণীর পৃষ্টপোষকতা লাভ করে। শিবসিংহ, কীর্তিসিংহ, দেব সিংহ, পদ্ম সিংহ, পুরাদিত্য, ভৈরব সিংহ ও বিশ্বাস দেবী।
66. বৈষ্ণব পদাবলী ছাড়া বিদ্যাপতি আর কী কী গ্রন্থ রচনা করেছিলেন? প্রকাশসাল উল্লেখ করে গ্রন্থগুলির নাম লেখো ?
উত্তর:-
ভূপরিক্রমা- ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ
কীর্তিলতা – ১৪০২-১৪০৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
পুরুষ পরীক্ষা -১৪১০ খ্রিস্টাব্দ
কীর্তিপতাকা – ১৪১০ খ্রিস্টাব্দ
লিখনাবলী – ১৪১৮ খ্রিস্টাব্দ
শৈবসর্বস্বহার – ১৪৩০-৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
গঙ্গাবাক্যাবলী – ১৪৩০-৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
বিভাগসার – ১৪৪০-৬০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
দানবাক্যাবলী – ১৪৪০-৬০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী – ১৪৪০-৬০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে
67. অবহট্টঠ ভাষায় লেখা বিদ্যাপতি দুটি গ্রন্থের নাম লেখ ?
উত্তর:-কীর্তিলতা ও কীর্তিপতাকা।
68. বিদ্যাপতির পুরুষ পরীক্ষা গ্রন্থটি কোন ভাষায় রচিত ?
উত্তর:- সংস্কৃত ভাষায়।
69. ‘ভক্তিরসামৃতসিন্ধু’ গ্রন্থটি কে কত খ্রিস্টাব্দে রচনা করেন গ্রন্থটিতে মোট কত শ্লোক আছে? গ্রন্থটি কটি বিভাগে বিভক্ত ও কি কি প্রত্যেকটি বিভাগের নাম লেখ ?
উত্তর:-১৫৪১ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরূপ গোস্বামী রচনা করেন। গ্রন্থটিতে ২১৪১ টি শ্লোক আছে। চারটি ভাগে বিভক্ত যথা-পূর্ব, দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর।
70. .জ্ঞানদাস কে ছিলেন ?
উত্তর:- চৈতন্যোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি।
71. জ্ঞানদাস কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?
উত্তর:- পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কাটোয়ায়, ষোড়শ শতাব্দীতে।
72. জ্ঞানদাস কোন সময়ে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর:- আনুুমানিক ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দ।
73. জ্ঞানদাস কোন সময়ের কবি ?
উ:- চৈতন্য উত্তর যুগের ষোড়শ শতাব্দীর কবি।
74. জ্ঞানদাস কার শিষ্য ছিলেন ?
উত্তর:- বৈষ্ণবগুরু নিত্যানন্দের পত্নী জাহ্নবী দেবীর শিষ্য ছিলেন।
75.জ্ঞানদাসের পদসংখ্যা কত ?
উত্তর:- ‘পদ কল্পতরু’তে জ্ঞানদাসের ভূমিকায় পাওয়া পদের সংখ্যা ১৮৬টি।
76.কোন পর্যায়ের পদ রচনায় জ্ঞানদাস শ্রেষ্ঠ ?
উত্তর:- জ্ঞানদাস আক্ষেপানুরাগ পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠ ।
77.গোবিন্দদাস কে ছিলেন ?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদকর্তা। চৈতন্যোত্তরকালে খ্যাতি অর্জনকারী কবিদের একজন।
78.গোবিন্দাস কোথায়, কখন জন্মগ্রহণ করেন ?
উত্তর:- মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলার নিকটবর্তী তেলিয়াবুধুরি গ্রামে, আনুমানিক ১৫৩৫ খ্রিস্টাব্দে।
79.কোন কবি ‘দ্বিতীয় বিদ্যাপতি’ নামে খ্যাত।
উত্তর:- গোবিন্দদাস। কবি বল্লভদাস অভিধা দিয়েছিলেন-গোবিন্দের কবিত্বগুণ, গেবিন্দ দ্বিতীয় বিদ্যাপতি।
80. গোবিন্দদাসের আসল পদবি কী ?
উত্তর :- সেন।
81. গোবিন্দদাস রচিত সংস্কৃত নাটকের নাম কী ?
উত্তর : ‘সংগীতমাধব’।
82. গোবিন্দদাস কোন পর্যায়ের পদকর্তা ?
উত্তর :- পূর্বরাগ, অভিসার, মান, কলহস্তরিতা, বাসকসজ্জা, মাথুর প্রভৃতি পর্যায়ের পদকর্তা।
83. কোন পদ পর্যায়ে গোবিন্দদাস শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছেন ?
উত্তর :- অভিসার পদ পর্যায়ে গোবিন্দদাস শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছেন। সমালোচকের মতে অভিসার পর্যায়ে তিনি রাজাধিকার।
84. অভিসার কাকে বলে ? এই পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি কে ? অভিসারের একটি পদের নাম লিখ।
উত্তর:- অভিসরণ বা উভয়মুখী চলা অর্থেই ‘অভিসার’ কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে। নায়িকার
উদ্দেশ্যে নায়কের কিংবা নায়কের উদ্দেশ্যে নায়িকার সংকেত কুঞ্জে মিলনের যে যাত্রা তাকে
অভিসার বলে। এই পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি গোবিন্দ দাস।
‘কন্টক গাড়ি কমল সম পদতল’ – পদটি হল অভিসার পর্যায়ের।
85. মান কাকে বলে ?
উত্তর:- নায়ক নায়িকা যেখানে পরস্পরের প্রতি অনুরক্ত এবং কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও যে বিশেষ মানসিক অবস্থায় (নায়িকার মনে সামান্য কারণে ঈর্ষার সঞ্চার হয় সেহেতু নায়কের প্রতি বিরূপ আচরণ) উভয়ের মিলনে বাধা জন্মায় তাই হল মান।
86. মাথুর কাকে বলে ?
উত্তর:- কৃষ্ণের মথুরা গমনে রাধিকার মনে এবং সমগ্র বৃন্দাবনে যে অন্ধকার সঞ্চারিত হয়েছিল
তাই মাথুর বিরহের পদগুলির বিষয় অর্থাৎ মাথুর শ্রীকৃষ্ণের মথুর প্রবাস বিষয়ের
বিপ্রলম্ভশৃঙ্গারের পদ। মাথুর বিরহেই সৃষ্টির আগুন জ্বালা যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েছে বিরহিনী
নায়িকার মন।
87.পূর্বরাগ কাকে বলে ? এর শ্রেষ্ঠ কবি কে ?
উত্তর:-‘’উজ্জ্বল নীলমণি’ গ্রন্থে বলা হয়েছে-
“রতির্যা সঙ্গমাৎ পূর্বং দর্শন শ্রবণাদিজা।
তয়োরুন্মীলতি প্রাজ্ঞৈঃ পূর্বরাগঃ স উচ্যতে।।”
অর্থাৎ মিলনের পূর্বে পরস্পরের দর্শন শ্রবণ ইত্যাদির দ্বারা নায়ক নায়িকার চিত্তে যে অনুরাগ জন্মে তাকেই পূর্বরাগ বলে। এর শ্রেষ্ঠ কবি চণ্ডিদাস।
88. আক্ষেপানুরাগ ও প্রেমবৈচিত্ত কাকে বলে ?
উত্তর:- প্রেমবৈচিত্ত ও আক্ষেপানুরাগ এই দুইয়ের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। তবে উভয়ের উপজীব্য প্রেম । যখন নায়িকার অন্তরে প্রেম জাগ্রত কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনুকূল নয় বলে মিলন সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় নায়িকার মনে যে আক্ষেপ তাকেই বলে আক্ষেপানুরাগ। অন্যদিকে প্রেমের গভীরতা হেতু মিলনের মধ্যেও গভীর বিরহ বোধের অন্য নাম প্ৰেম বৈচিত্ত। চণ্ডীদাস লেখেন – “দুহু ক্রোড়ে দুহু কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া”।
আমাদের সমস্ত ক্লাসগুলি ভিডিও আকারে পেতে আমাদের YouTube চ্যানেলের সাথে অবশ্যই যুক্ত থাকো। আর কোন ধরনণের লেখা পেতে চাও তা আমাদের কমেন্টে অবশ্যই জানাও।