Bengali SubjectSSC

ভারতীয় সাহিত্য । অনুবাদ ও অনুষঙ্গ । কবীর । মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন WBSLST Bangla

কবীর

পরিচিতি :-

প্রাচীন ভারতের একজন কবি যিনি সেই সময়ে দাঁড়িয়ে হিন্দু – মুসলমান সম্প্রীতির কথা বলেছিলেন। তার রচনা ভক্তি আন্দোলনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করলেও তিনি আসলে প্রেমের কথা এবং জীবনের কথা বলেছিলেন যার মধ্যে প্রত্যক্ষ কোন তত্ত্ব ছিলনা। পরবর্তীকালে তার গান ও কবিতাকে সুফি ধারা এবং মরমিয়া বাদের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়।

জন্ম – আনুমানিক ১৪৪০ খ্রিঃ, বর্তমান বারানসীতে।

কবীর নামের তাৎপর্য – ‘কবীর’ নামটির উৎস আরবি ‘আল কবির’ যার অর্থ ‘মহান’।

আবির্ভাবকাল সংক্রান্ত মতভেদ – কবীরের সঠিক আবির্ভাবকাল নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। কারো মতে, তিনি ১৩৩৯ থেকে ১৪৪৮ খ্রিঃ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। কেউ বলেন ১৪৪০ খ্রিঃ থেকে ১৫১৮ খ্রিঃ তাঁর সময়কাল।

পেশা- তাঁতি , জোলা বা সন্ত কবীর নামে পরিচিত।

বংশ পরিচয় সংক্রান্ত মতভেদ – প্রচলিত বিশ্বাসানুসারে কবীরের জন্ম হয়েছিল বারাণসীতে এক অবিবাহিতা ব্রাহ্মণীর হাতের তালু থেকে। পরে তিনি এক মুসলমান পরিবারে পালিত হন। ওয়েডলি বলেন, কবীরের জন্ম এক মুসলিম পরিবারেই। কেউ কেউ মনে করেন, কবীর বৈষ্ণবধর্ম প্রচারক রামানন্দের শিষ্য ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন সংক্রান্ত মতভেদ – কারো মতে, কবীর বিবাহ করেননি। আবার কেউ মনে করেন, তিনি ধনিয়া নামে এক মহিলাকে বিবাহ করেন। তাঁর কমল নামে এক পুত্র ও কামলি নামে এক কন্যাও ছিল এমন কথাও কেউ কেউ বলে থাকেন।

কবীরের দোঁহা:-

হিন্দি ভাষায় রচিত দুই পংক্তির কবিতাকে দোঁহা বলে। কবীরের কবিতাগুলি ‘দোঁহা’নামে পরিচিত। অবধি, ব্রজ ও ভোজপুরি ভাষায় রচিত তাঁর দোহা। কবীরের দোঁহার সংগ্রাহক ছিলেন কাশীমোহন সেন । সংগৃহীত সেই কবিতাগুলো রবীন্দ্রনাথ ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ‘Song’s of Kabir’ -1915 ।

কবীরের দোঁহাগুলি মুখে মুখে প্রচলিত ছিল । পরে সংকলকগণ সেগুলিকে গ্রন্থিবদ্ধ করে প্রকাশ করেন । সেই গ্রন্থগুলির তালিকাটি দেখে নাও :

১. অখরাবলী (১৯১৩)
২. অনুরাগসাগর (১৯০২)
৩. আত্মবোধ (১৯০১)
৪. ভণিত প্রকাশ (১৮৮৩)
৫. বীজকবানী (১৮১০)
৬. বোধসাগর (১৯০৬)
৭. একোত্তরশতক (১৯২০)
৮. হংসমুক্তাবলী (১৮৯৩)
৯. হংসমুক্তা-শব্দাবলী (১৯০৫)
১০. জ্ঞানসমাজ (১৮৬৯)
১১. কবীরবোধ (১৮৯২)
১২. কবীর দর্পন (১৮৯৮)
১৩. কবীর-গ্রন্থাবলী (১৯২৮)
১৪. কবীর-সাগর (১৯০৬)
১৫. রমৈনী (১৮৬৮)
১৬. শব্দাবলী (১৯২২)
১৭. শতক (১৯০১)
১৮. উপদেশ রত্নাবলী (১৮৮২)
১৯. বীজকভাষ্য (১৯৫৬)
২০. বীজক কবীর দাস (১৯১৫)
২১. বীজকমূল
২২. কবীর দোহাবলী (১৯৫২)
২৩. কবীর গ্রন্থাবলী (১৯৫১)
২৪. কবীর সাখী সংগ্রহ (১৯১২)
২৫. কবীর রচনামৃত (১৯৬৫)
২৬. মূলবীজক (১৯৩৬)
২৭. সাখীগ্রন্থ (১৯৫০)
২৮. সংস্কৃত বীজক গ্রন্থ (১৯৫০)
২৯. কবীর-সাখী-সার (১৯৫৬)
৩০. কবীর রচনাবলী (১৯২০)

কবীরকে কেন্দ্র করে রচিত গ্রন্থতালিকা :

বাংলাগ্রন্থ –

১. কবীর : ক্ষিতিমোহন সেন
২. কবীর : প্রভাকর মাচওয়ে (অনুবাদ:প্রভাতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়)

হিন্দি গ্রন্থ-

১. তারকনাথ অগ্রবাল, ‘কবীর পরিচয়’, কলিকাতা, বঙ্গীয় হিন্দি পরিষদ, ১৯৫১।
২. রামরতন ভাটনগর, ‘কবীর-সাহিত্য কী ভূমিকা’, এলাহাবাদ রামনারায়ণ লাল, ১৯৫০।
৩. পরশুরাম চতুর্বেদী, ‘কবীর-সাহিত্য কী পরখ’, এলাহাবাদ; ভারতী ভাণ্ডার, ১৯৫৪।

কবীরের অবদান :-

হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বহু মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে । ছোটো ছোটো কবিতা বা শ্লোক রচনা করে তিনি নিজের বক্তব্য সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারতেন । এগুলি কবীরের দোঁহা নামে খ্যাত । কবীরের অনুগামীদের কবীরপন্থী বলা হয় । কবীর ছিলেন একজন উচ্চ শ্রেণির কবি ও দার্শনিক । কবীরের দোঁহাগুলির মধ্যে দিয়ে উচ্চ দার্শনিক তত্ত্বের পরিচয় পাওয়া যায় । অপূর্ব কাব্য রসসিক্ত এই দোঁহাগুলি রচিত হয়েছিল অধিকাংশ সাধারণ মানুষের ভাষা হিন্দিতে । কারণ তাঁর মতে, সংস্কৃত হল বদ্ধ জলের মতো, কিন্তু ভাষা নদীর মতোই বেগবান হওয়া উচিত । কবীরের ধর্ম প্রচার হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে ।

Important SAQ question :

১। কবীর নামটি কোন শব্দ থেকে এসেছে ?

উঃ- আল-কবীর ।

২। ‘আল-কবির’ শব্দটি কোন ধরনের শব্দ ?

উঃ আরবি।

৩। কবীর শব্দের অর্থ কী ?

উঃ মহান।

৪।ভারতের ভক্তি আন্দোলনের পথপ্রদর্শক কে ছিলেন ?

উঃ কবীর।

৫। কবীরের দোহার সংগ্রাহক কে ছিলেন ?

উঃ ক্ষিতিমোহন সেন ।

৬। কবীরের কবিতাগুলো কে কী বলা হয় ?

উঃ দোহা।

৭। ‘Songs of Kabir ‘ কার অনুবাদ ?

উঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

৮। রবীন্দ্রনাথ কবীরের কটি কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন ?

উঃ ১০০টি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Primary TET 2022 Mock Test

X